Meesho Seller হওয়া: অনলাইন ব্যবসার নতুন দরজা
আজকাল অনলাইনে ব্যবসা করা মানে শুধু Amazon বা Flipkart নয়, এখন Meesho ও ভারতের অন্যতম বড় মার্কেটপ্লেস। লাখ লাখ ছোট ব্যবসায়ী, রিসেলার এবং ম্যানুফ্যাকচারার এখান থেকে নিয়মিত বিক্রি করছেন তাদের পণ্য। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে— Meesho -তে সেলার হিসেবে জয়েন করা সত্যিই লাভজনক কি না?

Meesho Seller হওয়া: লাভ, ক্ষতি ও বাস্তব অভিজ্ঞতা
চলুন, বিষয়টা বাস্তবভাবে দেখি।
Meesho কীভাবে কাজ করে?
Meesho মূলত একটা social commerce platform—মানে, এটি Facebook, WhatsApp বা Instagram-এর মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে পণ্য বিক্রির সুযোগ দেয়।
আপিনি চাইলে সরাসরি Meesho অ্যাপ বা ওয়েবসাইটে প্রোডাক্ট লিস্ট করতে পারো, আবার চাইলে নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে বিক্রিও করতে পারো।
Meesho Seller হওয়ার মূল সুবিধাগুলো
1. Zero Commission Policy
Meesho অনেক ক্যাটাগরিতে কোনো কমিশন নেয় না। মানে, বিক্রেতা পুরো প্রফিট নিজের কাছে রাখতে পারে।
এটা নতুন সেলারদের জন্য বড় সুবিধা, কারণ প্রফিট মার্জিনে কোনো কাটছাঁট হয় না।
2. No Setup Cost
অ্যাপে সেলার অ্যাকাউন্ট খুলতে কোনো চার্জ লাগে না। শুধু GST নম্বর আর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকলেই শুরু করা যায়।
3. Easy Product Upload
Meesho-এর ড্যাশবোর্ড খুবই সহজ—ছবি, দাম, ডিসক্রিপশন আপলোড করে কয়েক মিনিটেই নতুন ক্যাটালগ বানানো যায়।
4. Massive Customer Reach
ভারতের প্রতিটি রাজ্যে Meesho-এর ইউজার আছে। মানে, আপনি চাইলেই সারা দেশে আপনার প্রোডাক্ট বিক্রি করতে পারেন—কোনো বাড়তি মার্কেটিং ছাড়াই।
5. Logistics Support
Meesho নিজেই ডেলিভারি করে দেয়, অর্থাৎ আপনাকে কুরিয়ার নিয়ে ভাবতে হয় না।
আপনার কাজ শুধু প্রোডাক্ট রেডি করা, বাকি ডেলিভারি থেকে কাস্টমার সার্ভিস সব Meesho দেখে।
6. Payment Protection
Meesho পেমেন্ট এসক্রো সিস্টেমে রাখে। কাস্টমার প্রোডাক্ট রিসিভ করার পরই টাকা আপনার অ্যাকাউন্টে আসে—যা নিরাপদ এবং ট্রান্সপারেন্ট।
⚠️ Meesho Seller হওয়ার কিছু অসুবিধাও আছে
1. High Return Rate
Meesho-তে প্রোডাক্ট রিটার্ন রেট তুলনামূলক বেশি।
ফ্যাশন বা হোম ক্যাটাগরিতে অনেক কাস্টমার প্রোডাক্ট ফিরিয়ে দেয়, যার ফলে সেলারকে লজিস্টিক চার্জ বহন করতে হয়।
2. Low Control Over Branding
Meesho মূলত “no-brand” বা জেনেরিক প্রোডাক্টের জন্য বেশি পরিচিত।
তুমি যদি নিজের ব্র্যান্ড বিল্ড করতে চাও, তবে এখানে কাস্টমার লয়্যালটি তৈরি করা কঠিন।
3. Price Competition
Meesho-তে একই প্রোডাক্ট অনেক সেলার বিক্রি করে, ফলে দাম কমাতে হয় প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে। এতে লাভের পরিমাণ কমে যায়।
4. Payment Delay (কখনো কখনো)
কিছু ক্ষেত্রে রিটার্ন বা কাস্টমার ভেরিফিকেশনের কারণে পেমেন্ট বিলম্ব হয়। তবে বেশিরভাগ সময় 7–10 দিনের মধ্যে টাকা আসে।
📊 Meesho-তে লাভ-ক্ষতির হিসাব
| বিষয় | সুবিধা (লাভ) | অসুবিধা (ক্ষতি) |
|---|---|---|
| কমিশন | শূন্য কমিশন | - |
| ডেলিভারি | ফ্রি লজিস্টিক সাপোর্ট | রিটার্নে চার্জ দিতে হয় |
| কাস্টমার রিচ | সারাদেশব্যাপী | প্রতিযোগিতা বেশি |
| ব্র্যান্ডিং | সহজ শুরু | নিজস্ব ব্র্যান্ড কঠিন |
| পেমেন্ট | সিকিউর ট্রান্সফার | কিছু ক্ষেত্রে বিলম্ব |
কারা Meesho-তে সেলার হওয়া উচিত
- যারা ছোট স্কেলে প্রোডাক্ট বানান বা হোলসেলে কিনে বিক্রি করেন
- যারা অনলাইনে নতুন ব্যবসা শুরু করতে চান
- যারা বড় ইনভেস্টমেন্ট ছাড়াই মার্কেট টেস্ট করতে চান
কিন্তু যদি আপনি নিজের ব্র্যান্ড তৈরি করতে চান, বা প্রিমিয়াম প্রোডাক্ট বিক্রি করতে চান, তাহলে Meesho হয়তো দীর্ঘমেয়াদে উপযুক্ত জায়গা নয়।
Meesho এমন একটা প্ল্যাটফর্ম যা নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য দারুণ সুযোগ।
এখানে ব্যবসা শুরু করা সহজ, রিস্ক কম, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে সফল হতে হলে ব্র্যান্ডিং, কাস্টমার রিটেনশন, আর প্রোডাক্ট কোয়ালিটিতে জোর দিতে হবে।
“তুমি কি Meesho সেলার হিসেবে শুরু করতে চাও? নিচে কমেন্টে জানাও তোমার অভিজ্ঞতা!”